টেকনিক্যাল এনালিসিসঃ
টেকনিক্যাল এন্যালিসিস মানে হলো চার্ট. আপনি আগে প্রাইস কিভাবে মুভ করেছে সেটা দেখে ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করবেন। চার্টে কি কি দেখবেন?সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ হলো ট্রেন্ড বের করা। এটি সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ কিন্তু সবচেয়ে অবহেলিত। নতুন ট্রেডার রা লস করে কারণ তারা ট্রেণ্ডের বিপক্ষে খেলে (ট্রেড করে)। এটি কখনো করা যাবেনা। ফুলস্টপ। এটা নিয়ে আর কোনো কথা নয়, কোনো বিতর্ক নয়। পরিসংখ্যান বলে, ৯০% ট্রেডার লস করে, ৫% লাভ ও করেনা, লস ও করেনা, সমান সমান থাকে। আর ৫% লাভ করে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাংলাভাষী ট্রেডারদের এই এলিট ৫% এর মধ্যে রাখা।
চার্ট দেখে ট্রেন্ড কিভাবে বের করবেন?
চার্ট-১
যেকোন ট্রেডিং পেয়ারের চার্ট খুলুন (৪(চার( ঘন্টার) চার্ট)। এবার আপনার আশেপাশে তিন-চার বছরের কোন বাচ্চা থাকলে তাকে জিজ্ঞেস করুন এটা উপরের দিকে না নীচের দিকে যাচ্ছ? সে যদি বলে উপরের দিকে তাহলে ট্রেন্ড হলো আপ। আপ ট্রেণ্ডে কখনো সেল করবেন না। সবসময় বাই করার জন্য সুযোগ খুঁজবেন। একেবারে উপরে বাই না করে কিছুটা ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করে তারপর বাই করবেন। তেমনি ডাউন ট্রেন্ডে কখনো বাই করবেন না; সেল করার জন্য সুযোগের অপেক্ষা করবেন। চার্ট-১ ও ২ দেখে বলুন কোনটি আপ ট্রেন্ড ও কোনটি ডাউন ট্রেন্ড?
চার্ট-২
চার্টে দ্বিতীয় যে বিষয়টি লক্ষ করবেন সেটি হলো, সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স। সাপোর্ট হলো ঘরের মেঝে (floor)-এর মতো, লক্ষ করবেন এর নীচে প্রাইস সহজে যেতে পারছেনা। এতএব, প্রাইজ মেঝের কাছাকাছি আসলে বাই করতে হবে। আর রেজিস্টেন্স হলো ঘরের ছাদের (ceiling) মতো। খেয়াল করবেন প্রাইস এর উপরে সহজে যেতে পারছেনা। এতএব, প্রাইজ ছাদের কাছাকাছি আসলে সেল করতে হবে। চার্ট-৩ দেখুন এবং মেঝে ও ছাদ লক্ষ করুণ।
চার্ট-৩
কোথায় সেল করতে হবে সেটি ঘর ১ এ দেখানো হয়েছে। এখন ছোট একটি কুইজঃ প্রাইজ যখন পয়েন্ট ক তে আসলো তখন কি করতে হবে? কোথায় টেক প্রফিট নিতে হবে? কোথায় স্টপ লস দিতে হবে?
চার্ট টাইপ-ক্যান্ডলস্টিক
অনেক প্রকারের চার্ট আছে তবে আমরা প্রধাণতঃ ক্যান্ডেলস্টিক (মোমবাতি) টাইপটি ব্যবহার করবো। জাপানী চাউল ব্যবসায়ী(রা) আঠারো শতকে এটি উদ্ভাবন ও ব্যবহার করেন চাউল ট্রেড করার জন্য। স্টিভ নেলসন এক জাপানী ব্রোকারের কাছ থেকে এই 'গোপন টেকনিক' শেখে। স্টিভ নেলসন এটি নিয়ে পড়াশোনা, রিসার্চ করেন ও এটি নিয়ে বিস্তর লেখালেখি করেন ফলশ্রুতিত
ে ৯০ এর দশকে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তাহলে ক্যান্ডেলস্টিক কি? ছবির সাহায্যে এটি বোঝা যাকঃ
চিত্রঃ ক্যান্ডেলস্টিক
ক্যান্ডেলস্টিকে চারটি পয়েণ্ট থাকে ওপেন (open), হাই (high), লো (low), ও ক্লোজ(close).
ক্লোজ যদি ওপেনের উপরে হয় তাহলে দাম বাড়ছে এবং খালি/সাদা/সবুজ বডি দ্বারা দেখানো হয়।
ক্লোজ যদি ওপেনের নীচে হয় তাহলে দাম কমছে এবং ভর্তি/কালো/লাল বডি দ্বারা দেখানো হয়।
বডির উপরের সুতার উপরের পয়েন্ট হলো মূল্যের সর্বোচ্চ পয়েন্ট
বডির নীচের সুতার নীচের পয়েন্ট হলো মূল্যের সর্বনিম্ন পয়েন্ট
ক্যান্ডেলস্টিক যেকোন টাইমফ্রেমে যেমনঃ দিন, চার-ঘন্টা, বা পনেরো মিনিট, ব্যবহার করা যায়। একটি নির্দিষ্ট টাইমফ্রেমে 'প্রাইজ একশন' ক্যান্ডেলস্টিক দেখে বোঝা যায়।
ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্নস
যখন একটিমাত্র ক্যান্ডেলস্টিক বিশ্লেষণ করবো তখন এই প্যাটার্নগুলো চিনতে পারলে ট্রেড সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবেঃ
স্পিনিং টপসঃ ক্যান্ডেলস্টিক যার সুতাগুলি লম্বা কিন্তু বডি ছোট তাকে স্পিনিং টপ বলে। বডি খালি না ভর্তি বা বডির রঙ কেমন তা গুরুত্ত্বপূর্ণ নয়। এই প্যাটার্ন 'সিদ্ধান্তহীনতা' নির্দেশ করে। অর্থাৎ ক্রেতা (বুল) ও বিক্রেতা (বেয়ার) কেউই বেশ-কিছুটা প্রাইজ বাড়াতে বা কমাতে পারছেনা।
তাহলে আপট্রেন্ডের সময় যদি একটি স্পিনিং টপ দেখি তাহলে বুঝতে পারবো খুব সম্ভবত আর বেশী ক্রেতা নেই (বা ক্রেতা বিক্রেতা প্রায় সমান আছে)। ট্রেণ্ড তখন ঘুরে যেতে (রিভার্সাল) হতে পারে। বিশেষ করে স্পিনিং টপ যদি রেজিস্টেন্সের (ছাদের) কাছে বা অন্য কোন গুরুত্ত্বপূর্ণ ফিবোনাচ্চি লেবেলে (ফিবোনাচ্চি লেবেল কি তা আমরা পরে শিখবো) দেখি তাহলে বাই করা থাকলে সেখানে ট্রেড থেকে বের হয়ে যেতে হবে (বা/ও উল্টা দিকে সেল পজিশন নিতে হবে)। ডাউন্ট্রেন্ডের দিকে স্পিনিং টপ পেলে সেল পজিশন ক্লোজ করতে হবে বা/ও বায় (buy) করতে হবে।
মারুবজু
জাপানী শব্দ এই জন্য শুনতে এরকম। এর মানে শুধু বডি আছে সুতা নেই। স্পিনিং টপে সুতা বেশি ছিলো এই জন্য সেটি সিদ্ধান্ত হীনতা বোঝাচ্ছিল। এখানে কোন সুতা নেই অর্থাৎ সিদ্ধান্ত নিতে কোন সমস্যা নেই। সাদা মারুবজু মানে শুধু ক্রেতা আছে, বিক্রেতা নেই। তাহলে এওকম মারুবজু দেখলে বায় করতে হবে (এটা ধরে নিয়ে যে পরের টাইম পিরিয়ডেও ক্রেতারা রাজত্ত্ব করবে)। ব্লাক/রেড মারুবজু মানে সেল করতে হবে কারন কোন ক্রেতা নেই শুধু বিক্রেতা আছে।